শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:১৯ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক : উখিয়ার উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের রহমতের বিল এলাকায় মো. শাহজাহান হত্যা মামলার আসামীদের হুমকিতে অসহায় হয়ে পড়েছে মামলার বাদী ও পরিবার। মামলার তদন্তকারি পুলিশ কর্মকর্তার রহস্যজনক আচরণ, প্রকাশ্যে ঘুরা-ফেরা করলেও কোন আসামিকে গ্রেফতার না করা, বাদী পরিবারকে হত্যাসহ মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানীর হুমকিরও অভিযোগ উঠেছে। এ অবস্থায় তিন কন্যা ও বৃদ্ধ শশুরকে নিয়ে অসহায় জীবন যাপন করছে নিহত শাহজাহানের স্ত্রী ও মামলার বাদী জোসনা আক্তার। একমাত্র পুত্রকে হারিয়ে অনেকটা বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছে নিহত শাহজাহানের বৃদ্ধ পিতা সিরাজুল ইসলাম।
রবিবার (২৮ জানুয়ারি) দুপুরে কক্সবাজার প্রেসক্লাবে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এমন তথ্য জানান নিহত শাহজাহানের স্ত্রী ও মামলার বাদী জোসনা আক্তার।
জোসনা আক্তার সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, ২০২৩ সালের ৮ নভেম্বর উখিয়ার পালংখালীর রহমতের বিল এলাকায় তার স্বামী মো. শাহজাহানকে একটি সংঘবদ্ধ মাদক কারবারি চক্রের সদস্যরা পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে। বিজিবি সদস্যরা একটি মাদকের চালান আটক করার পর ওই চালানটি ধরিয়ে দিতে আমার স্বামী সোর্স ছিল সন্দেহে এই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে ইয়াবা কারবারীরা। এ ঘটনায় তিনি বাদি হয়ে ১০নভেম্বর ১০ জনের নাম উল্লেখ করে ১৫ জনের বিরুদ্ধে উখিয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলায় এজাহারভূক্ত আসামিরা হলো, মনির আলম, ল্যাংটা কামাল, মোস্তাফিজ, সাইফুল ইসলাম, ওসমান গণি, সালা উদ্দীন, জানে আলম, ফারুক, জিয়াউদ্দিন তারেক ও বার্মাইয়া আলমগীর।
তিনি বলেন, মামলাটি দায়েরের পর মামলার তদন্তকারি পুলিশ কর্মকর্তার রহস্যজনক আচরণ আমাদের অসহায় করে তুলেছে। মামলা দায়েরের পর থেকে এই পর্যন্ত পুলিশ কোন আসামিকে গ্রেফতার করেনি। গ্রেফতারের জন্য দৃশ্যমান কোন তৎপরতাও নেই। আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরা-ফেরা করে প্রতিনিয়ত আমাদের প্রাণনাশের হুমকি, মিথ্যা মামলায় উল্টো হয়রানীর হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। পুলিশকে আসামিদের অবস্থান সম্পর্কে বারবার অবহিত করার পরও পুলিশ কোন আসামি গ্রেফতার করেনি।
মামলার বাদী বলেন, এ পরিস্থিতিতে মামলার এক নম্বর আসামি মনির আলমকে বিজিবি সদস্যরা গ্রেফতার করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। মনির বর্তমানে কারাগারে থাকলেও মামলার তদন্তকারি পুলিশ কর্মকর্তা আসামিকে রিমান্ড বা জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন মনে করেনি। এক মাস ধরে মনির কারাগারে রয়েছে। এতে মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তার বিষয়টি আমাদের সন্দেহ তৈরি হয়েছে। আমরা আদালত ও পুলিশ সুপারের নিকট মামলার তদন্তকারি কর্মকতার পরিবর্তন চেয়ে আবেদন করেছি। এরও কোন সুরাহা এপর্যন্ত হয়নি।
অন্যদিকে আসামিরা স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের আশ্রয়-পশ্রয়ে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। মামলার এজাহারভূক্ত আসামি বর্মাইয়া আলমগীর প্রকাশ্যে আমার বাড়িতে গিয়ে হত্যার হুমকি দিচ্ছেন। বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করলেও পুলিশ আসামী গ্রেফতারের পরিবর্তে আইনজীবীদের সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করছেন। এ পরিস্থিতিতে আমরা মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তার পরিবর্তনের দাবি জানাচ্ছি। একই সঙ্গে আমাদের নিরাপত্তার দাবি জানাই। অন্যতায় আমাদের বলা হোক আমরা মামলা প্রত্যাহার করে নিব।
তিনি বলেন, প্রভাবশালী চক্রের হুমকিতে আমি সহ আমার পরিবার অসহায়। এখন স্বামী হত্যার বিচার পাব কিনা আমি জানি না। এ অবস্থায় তিন কন্যা ও বৃদ্ধ শশুরকে নিয়ে অসহায় জীবন যাপন করছি। একমাত্র পুত্রকে হারিয়ে অনেকটা বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছে আমার শ^শুর সিরাজুল ইসলাম। আমরা প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছি।
ব্যাপারে উখিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ও মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা এ বি এম তারেক হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, পুলিশ নিজস্ব গতিতে মামলার তদন্তকাজসহ আসামিদের গ্রেপ্তার সবধরণের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
.coxsbazartimes.com
Leave a Reply